সিংহ রাশির ১৪৩১ বাংলা বছরটা কেমন কাটবে, কি করলে ভালো থাকবেন
১৪৩১ সালের পয়লা বৈশাখ থেকে চৈত্রসংক্রান্তি পর্যন্ত সিংহ রাশির মোটামুটি বছরটা কেমন যাবে তার সম্ভাব্য ফলাফল ও কি করলে বছরটায় ভালো থাকবেন।
রবির প্রভাবাশ্রিত উদ্ভাবনী শক্তির ধারক ও বাহক সিংহ রাশি। মানসিক শক্তির উৎসদাতা সিংহ রাশির জাতক জাতিকাদের মধ্যে থাকে বলিষ্ঠ গাম্ভীর্য। এরা জীবন পথে এগিয়ে চলে বাধাবন্ধহারা গতিতে। এদের মধ্যে রয়েছে দয়ামায়া, অনাশ্রিতকে আশ্রয়দান করার ক্ষমতা। এরা সব সময়েই কৃতজ্ঞ। দোষ স্বীকার করলে ক্ষমা করাই এদের জীবনের দস্তুর।
ভোগের মধ্যে দিয়েই এদের ভগবানকে ডাকা। সব ছেড়ে তাঁকে চাই, এমন ভাবনা এ রাশির জাতক জাতিকারা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারে না। ভোগবাসনা চরিতার্থ না হলে এদের মানসিকতা নিম্নাভিমুখী হয়ে পড়ে। সন্তানভাবনা অতিমাত্রায়। রাগ ও স্পষ্টবাদিতার কারণে আত্মীয় ও বন্ধুর সংখ্যা খুবই কম। যে কোনও পরিবেশে প্রথম অবস্থায় নয়, পরে নিজেকে জাহির করার চেষ্টা।
বিবাহিত জীবনে তমোগুণী শনির প্রভাবে এ রাশির জাতক জাতিকারা শতকরা একজনও শান্তি পেয়েছে কিনা সন্দেহ। সিংহ রাশির ডিভোর্সের সংখ্যা অন্য রাশির তুলনায় বেশি।
আমার জ্যোতিষশাস্ত্রের শিক্ষাগুরু শ্রীশুকদেব গোস্বামীর গ্রন্থের সাহায্য নিয়ে এই অংশটুকু লেখা হয়েছে। এর সঙ্গে সংযোজন করা হয়েছে নিজের পেশাগত জীবনের বেশ কিছু অভিজ্ঞতার কথা। লেখক চিরকৃতজ্ঞ হয়ে রইল উক্ত গ্রন্থের লেখক ও প্রকাশকের কাছে।
বছরটা কেমন কাটবে : সারা বছর যে সব কাজগুলো আপনি করবেন তাতে প্রথমে বাধা কিছু হবে, পরে কাজগুলো হবে। হই হই করে হওয়াটা হবে না। একথা যারা পেশা বা ব্যবসায় যারা আছেন উভয়ের ক্ষেত্রেই সমান ভাবে প্রযোজ্য। বাধা মাইনের চাকুরিয়াদের কর্মক্ষেত্রে একটা না একটা অস্বস্তি লেগে থাকবে।
আর্থিক অবস্থার লক্ষণীয় পরিবর্তন কিছু হবে না। গতানুগতিক ধারায় চলবে অর্থ ভাগ্য। মাঝে মধ্যে আর্থিক বিষয়ে উদ্বেগ ও অস্বস্তি মনকে বেশ বিব্রত করে রাখবে তবে সে অবস্থাটাও উতরে যাবে। অপ্রত্যাশিতভাবে কিছু অর্থ নষ্টের সম্ভাবনা রয়েছে। কাউকে বিশ্বাস করে অর্থ না দেওয়াই ভালো।
স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব বাজে সময় একটা ছিল সেটা চলে গেছে। এখন থেকে সময়টা দেহ ও মনের পক্ষে ধীরে ধীরে অনেকটাই যাবে স্বস্তির দিকে বড় কোনও রোগ ভোগ ও স্বাস্থ্যের কারণে বড় রকমের অর্থ নষ্টের কোনও কারণ নেই।
টাকা ধার দিলে কিংবা অর্থ বিনিয়োগ করলে ক্ষতির সম্ভাবনা। কোনও ঝুঁকির কাজে যাওয়া মানে অর্থ শ্রাদ্ধ হওয়া। হঠাৎ কারও সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ে এ বছর অনেকবারই মানসিক শান্তি নষ্ট হবে। শত্রুতা করে কেউ ক্ষতি সাধনে সমর্থ হবে না। আত্মীয় ও বন্ধুদের দিক থেকে লাভ বা ক্ষতি কিছু হবে না।
বিদ্যার্থীদের বিদ্যায় আশানুরূপ উন্নতি বা অবনতি কিছু হবে না। ধর্মের প্রতি কোনও টান বা আকর্ষণ কিছু থাকবে না। দূরপাল্লায় ভ্রমণ যোগ নেই তবে কাছাকাছি টুকটাক কোথাও বেড়াতে যাবে। অদীক্ষিতদের দীক্ষার সম্ভাবনা কম।
বয়স্কদের স্বাস্থ্যের কারণে হঠাৎ করে এক গাদা অর্থ ব্যয়ের যোগ। নতুন কিছু আসবাব কেনার কারণে খরচ বাড়তে পারে। প্রতিষ্ঠা জীবনে শত্রু দ্বারা ক্ষতির ভয় নেই। কোনও ফালতু বন্ধুর পাল্লায় পড়ে সম্মান হানির সম্ভাবনা। মোটের উপর বছরটা কাটবে একটা না একটা অস্বস্তির মধ্য দিয়ে। বড় ক্ষতির ভয় নেই তবে স্বস্তির অভাবটা থেকে যাবে।
এখানে যে প্রতিকারগুলি রাশি অনুযায়ী করা হল তা শুধুমাত্র এক বছরের জন্য। প্রতিকারগুলি আমার মনগড়া কোনও কথা নয়। বিভিন্ন সময়ে ভারতের নানা প্রান্তে ভ্রমণকালীন পথচলতি সাধুসঙ্গের সময় লোক-কল্যাণে সাধুদের বলা প্রতিকারগুলিই এখানে করা হল।
কি করলে একটু ভালো থাকবেন : প্রতিদিন সকাল থেকে সারাদিনের মধ্যে যখন সময় পাবেন, যে কোনও কুকুরকে যে কোনও খাবার একটু খেতে দিন। চেষ্টা করবেন একটা দিন যেন বাদ না যায়। কাজটা চলতে থাকলে দেহমনে অস্বস্তি আসবে না। সারা বছরে অনেক বাধা দুর্গতির হাত থেকে রক্ষা পাবেন।
কি রঙের পোশাক পরবেন : লাল, গোলাপি, হলুদ, বাসন্তী রঙের পোশাক এই রাশির জন্য শুভ। শুভ প্রচেষ্টায় সাফল্য ও দেহমনের আনন্দদায়ক হবে। বাড়ি বা ঘরের জন্য এর যে কোনও একটা রং ব্যবহার করতে পারেন।
এবার ব্যক্তিগত রাশি অনুসারে ‘ফল’ কতটা মিলবে সে বিষয়টি খোলসা করে বলা যাক। এখানে যে ফলাফল লেখা হল তা একেবারেই অনুমানভিত্তিক।
নক্ষত্র ভেদে এক এক জাতক-জাতিকার মানসিক গঠন, চিন্তাভাবনা, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, জীবনপ্রবাহ এক একরকম হয়ে থাকে; এর সঙ্গে থাকে জন্মকালীন রাশিচক্রে শুভাশুভ গ্রহের অবস্থান। রাশি এক হলেও নক্ষত্র ইত্যাদি ভেদে ফলাফলের তারতম্যটাই স্বাভাবিক।
অত্যন্ত সূক্ষ্ম বিচার করে ফলাফল লেখা সম্ভব হয় না। প্রত্যেকটা রাশির কোনও একটা নক্ষত্রকে ধরে গড়ে একটা অনুমানভিত্তিক শুভাশুভ ফল লেখা হয়। ফলে কারও ফল মেলে দারুণভাবে, কারও কিছু কিছু, কারও বা একেবারেই নয়।
সব কথা মিলবে, এমনটা ভাববার কোনও কারণ নেই। এখানে রাশির ওপর ভিত্তি করে ভাগ্যফল নিয়ে যা লেখা তা অভিজ্ঞতায় দেখা একটা আভাস মাত্র। এটাই বাস্তব সত্য বলে ধরে নিয়ে চলাটা কোনও কাজের কথা নয়, চলার কারণ আছে বলেও মনে হয় না।